তাপগতিবিদ্যা নোট অনুধাবন মূলক গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নোত্তর এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান HSC --100% Common

তাপগতিবিদ্যা নোট অনুধাবন মূলক গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নোত্তর এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান  By -Flparvez



তাপগতিবিদ্যা (hermodynamies) অনুধাবন মূলক প্রশ্নোত্তর:  এইচএসসি ভাই বোনদের জন্য তাপগতিবিদ্যা বিষয়ের উপর গুরুত্বপূর্ন কিছু নোট দেওয়া হলো। এগুলি তোমরা কলেজের পরীক্ষা, এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষা, এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করতে পারো। যেকোনো বোর্ডের জন্যই শতভাগ কমন পরবে ইনশা-আল্লাহ। গুরুত্বপূর্ন অনুধাবন মূলক প্রশ্নোত্তর এখানে দেওয়া হলো :


  1.প্রশ্ন : অন্তঃস্থ শক্তির উদ্ভব হয় কিভাবে—ব্যাখ্যা কর ?

  উত্তর: প্রত্যেক বস্তুর ভেতরই একটি শক্তি থাকে। এই শক্তি দ্বারা বস্তুটি কাজ করতে পারে। এই শক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর করা যায়। প্রকৃত পক্ষে পদার্থের অণুগুলির রৈখিক গতি, পরমাণুর কম্পন ও আবর্তন এবং নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রনের গতির প্রভাবে অন্তঃস্থ শক্তির উদ্ভব হয়।  

 2.প্রশ্ন : বস্তুর অভ্যন্তরীন শক্তির পরিবর্তন হলেই এর তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়- ব্যাখ্যা কর ?

 উত্তরঃ দুটি ভিন্ন তাপমাত্রার বস্তুকে পরস্পরের তাপীয় সংস্পর্শে রাখলে ক্রমান্বয়ে বস্তু দুটি একই তাপমাত্রায় পৌঁছে অর্থাৎ তাপীয় সাম্যবস্থায় পৌছে। তাপীয় সাম্যবস্থায় পৌছার জন্য উষ্ণ বস্তুর অভ্যন্তরীণ শক্তি হ্রাস পায় এবং শীতল বস্তুর অভ্যন্তরীন শক্তি বৃদ্ধি পায়। এতে করে উষ্ণ বস্তুর তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং শীতল বস্তুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাত-এব আমিরা বলতে পারি কোন বস্তুর অভ্যন্তরীন শক্তির বৃদ্ধিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অভ্যন্তরীন শক্তির হ্রাসে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। সুতরাং বলা যায় যে, তাভ্যন্তরীন শক্তির পরিবর্তন হলেই বস্তুর তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়।  

3.প্রশ্ন : তাদের যান্ত্রিক সমতা 4.2JCal-1 বলতে কী বুঝায় ?

  উত্তর: তাপের যান্ত্রিক সমতা: একক তাপ উৎপন্ন করতে যে পরিমান কাজ সম্পাদন করতে হয়। বা একক তাপ দ্বারা যে পরিমান কাজ সম্পাদন করা যায় তাকে তাকে তাপের যান্ত্রিক সমতা বলে। তাত এর তাপের যান্ত্রিক সমতা 4.2JCal-1 বলতে বুঝায় এক ক্যালরি তাপ দ্বারা 4.2j জুল কাজ সম্পাদন করা যায় বা এক ক্যালরি তাপ উৎপন্ন করতে 4.2j জুন কাজ সম্পাদন করতে হয়।

  4.প্রশ্ন : অভ্যন্তরীন শক্তি বা অন্তঃস্থ শক্তি ব্যাখ্যা কর?

  উত্তর : অভ্যন্তরীন শক্তি বা অন্তঃস্থ শক্তি : প্রত্যেক বস্তু বা সিস্টেমের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট পরিমান শক্তি সঞ্চিত থাকে যার দ্বারা বস্তু বা সিস্টেম অনুকূল পরিস্থিতিতে অন্যশক্তি উৎপন্ন করতে পারে বা কাজ সম্পাদন করতে পারে। এ শক্তিকে কয় বা সিস্টেমের অভ্যন্তরীন শক্তি বা তন্তঃস্থ শক্তি বলে। বস্তু বা সিস্টেমের মধ্য্য অণু বা পরমাণুসমূহের গতিশক্তি এবং তাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল তাচ্য:আনবিক বলের জন্য এ শক্তি উৎপন্ন হয়। এ শক্তি বস্তু বা সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ গঠনের উপর নির্ভর করে। কোন বস্তু বা সিস্টেমের মোট অভ্যন্তরীণ শক্তি পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তবে অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন পরিমাপ করা যায়। কোন বস্তু বা সিস্টেমের অণু সমূহের গতিশক্তি ও স্থিতিশক্তির যোগফলই হল তার অভ্যন্তরীন শক্তি।

  5.প্রশ্ন : তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রটি বিবৃত ও ব্যাখ্যা কর ? 

 উত্তর: তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র : জুলের বিবৃতি : যখনই তাপকে কাজে বা কাজকে তাদে রূপান্তর করা হয় তখন তাপ ও কাজ পরস্পরের সমানুপাতিক হয়।  ব্যাখ্যা : যদি H পরিমান তাপ দ্বারা W পরিমান কাজ সম্পাদন করা যায় তবে তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রানুসারে,  W ∝ H  বা W = JH  ক্লসিয়াসের বিবৃতি : যখন কোন সিস্টেমে তাপশক্তি সরবরাহ করা হয় তখন সেই তাপ শক্তির কিছু অংশ সিস্টেমের অন্তস্থ শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বাকি অংশ দ্বারা সিস্টেম বাহ্যিক কাজ সম্পাদন করে।  যদি কোন সিস্টেমে dQ পরিমান তাপ শক্তি সরবরাহ করায় অন্তস্থ শক্তির পরিবর্তন dU এবং সিস্টেম কর্তৃক সম্পাদিত কাজ dW হয়, তাহলে তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রানুসারে লিখা যায়, dQ = dU + dW  

 6.প্রশ্ন : তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র শক্তি সংরক্ষণসূত্রের একটি বিশেষ রূপ-ব্যাখ্যা কর ?

উত্তর : শক্তির সংরক্ষণ সূত্রমতে, শক্তি কখনো সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না, কেবল এক রূপ হতে অন্য রূপে রূপান্তর করা যায়। তাপরদিকে গতিবিদ্যার প্রথম সূত্র মতে, dQ - dU + dW । এখানে সরবরাহকৃত তাপের একটি অংশ কাজে রূপান্তর হয় তাপর অংশ দ্বারা সিস্টেমের তন্তস্থ শক্তি বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বলা যায় এখানে তাপ শক্তির কোন অংশ অপচয় হয়না।তাত এব বলা যায় যে, তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র শক্তি সংরক্ষণ সূত্রে একটি বিশেষ রূপ।   প্রশ্ন : পানির আপেক্ষিক তাপ 4200JKg-1K-1 বলতে কী বুঝায়?  উত্তর : পানির আপেক্ষিক তাপ 4200JKg-1K-1 বলতে বুঝায় 1kg ভরের পানির তাপমাত্রা 1K পরিমান বৃদ্ধি করতে 4200j তাপের প্রয়োজন হয়।

7.প্রশ্ন : দেখাও যে, সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় সিস্টেম দ্বারা সম্পাদিত কাজ সিস্টেমে সরবরাহকৃত তাপশক্তির সমান ?

উত্তর : তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র মতে, dQ = dU + dW, সমোষ্ণ প্রক্রিয়ার সিস্টেমে তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন ঘটে না। তাই সিস্টেমের অন্তঃস্ত শক্তির কোন পরিবর্তন হয়না। অর্থাৎ dU = 0 হয়। সুতরাং, dQ = dw ।  

 8.প্রশ্ন : স্থির চাপে হিনিয়ামের মোলার আপেক্ষিক তাপ 20.9JK- 1mole-1 বলতে কী বুঝায়?

  উত্তর : স্থির চাপে হিলিয়ামের মোলার আপেক্ষিক তাপ 20.9JK-1mole-1  বলতে বুঝায় চাপ স্থির রেখে এক মোল হিলিয়াম গ্যাসের তাপমাত্রা এক কেলভিন বৃদ্ধি করতে 20.9J তাপের প্রয়োজন হয়।   প্রশ্ন : তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রের সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর।  উত্তর : তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রের প্রধান সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এ সূত্রের সাহায্যে বলা যায়না যে, প্রযুক্ত তাপের শতকরা কত ভাগ কাজে বা কৃত কাজের শতকরা কতভাগ তাপে রূপান্তরিত হতে পারে।   

9.প্রশ্ন : রূদ্ধতাপীয় সংকোচনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় কেন? 

 উত্তর : রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপের কোন আদান প্রদান ঘটেনা কিন্তু গ্যাসের অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন ঘটে। রূদ্ধতাপীয় সংকোচনের ক্ষেত্রে গ্যাসের উপর কাজ সম্পাদিত হয়। ফলে গ্যাসের অন্তস্থ শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং রূদ্ধতাপীয় সংকোচনে গ্যাস গরম হয়।   

10.প্রশ্ন : রূদ্ধতাপীয় প্রসারণে গ্যাস শীতল হয়—ব্যাখ্যা কর ?

উত্তর : রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপের কোন আদান প্রদান ঘটেনা কিন্তু গ্যাসের অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন ঘটে। রূদ্ধতাপীয় প্রসারণের ক্ষেত্রে গ্যাসের দ্বারা কাজ সম্পাদিত হয়। ফলে গ্যাসের অন্তস্থ শক্তি হ্রাস পায় এবং গতিশক্তি হ্রাস পায়। ফলে গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। সুতরাং রূদ্ধতাপীয় প্রসারণে গ্যাস শীতল হয়।   

11.প্রশ্ন : রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপমাত্রা কখনো স্থির থাকে না কেন? ব্যাখ্যা কর। 

 উত্তর : রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় গ্যাসকে হঠাৎ চাপ দিয়ে সংকুচিত করলে কিছু তাপ উৎপন্ন হয়। এই তাপ তাপসারণ না হওয়ায় গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। আবার গ্যাসকে হঠাৎ প্রসারিত হতে দিলে গ্যাস কিছু পরিমাণ কাজ সম্পাদিত হওয়ায় এবং বাইরে থেকে তাপ ভিতরে না আসায় গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। সুতরাং বলা যায়, রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপমাত্রা কখনো বৃদ্ধি পায় আবার কখনো হ্রাস পায় অর্থাৎ তাপমাত্রা কখনো স্থির থাকে না। অথবা, তাপ গতিবিদ্যার প্রথম সূত্র হতে আমরা জানি, dQ = du + dW । আবার রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেমে তাপের লেনদেন হয়না বলে dQ = 0 হয়। অতএব, du + dw = 0 বা, du= -dw  বা, dU = -PdV।  কিন্তু আমরা জানি রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় আয়তন স্থির থাকেনা। অর্থাৎ dV ≠ 01 সুতরাং dU ≠ 0 অর্থাৎ সিস্টেমের অন্তস্থ শক্তি স্থির থাকেনা। যেহেতু অন্তস্থ শক্তি স্থির থাকেনা সেহেতু সিস্টেমের তাপমাত্রা স্থির থাকেনা।  

 12.প্রশ্নঃ CV অপেক্ষা CP বৃহত্তর কেন?

  উত্তর : আয়তন স্থির রেখে কোন গ্যাসে তাপ প্রয়োগ করা হলে প্রয়োগকৃত তাপের সম্পূর্ণ তাংশই গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ব্যয় হয়। কিন্তু চাপ স্থির রেখে কোন গ্যাসে তাপ প্রয়োগ করা হলে প্রয়োগ কৃত তাদের একটা অংশ তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে এবং অবশিষ্ট অংশ বাহ্যিক কাজ সম্পাদনে ব্যয় হয়। ফলে সমপরিমান তাপ প্রয়োগে উভয় ক্ষেত্রে তাপমাত্রা সমপরিমান বৃদ্ধি পায়না। তাই স্থির চাপে এক মোল গ্যাসের তাপমাত্রা এক কেলভিন বৃদ্ধি করতে যে পরিমান তাদের প্রয়োজন হয়, স্থির আয়তনে এক মোল গ্যাসের তাপমাত্রা এক কেলভিন বৃদ্ধি করতে সে পরিমান তাদের প্রয়োজন হয়না। তাই CV অপেক্ষা CP বৃহত্তর।  

 13.প্রশ্ন : জলপ্রপাতের পাদ বিন্দুর তাপমাত্রা বেশি হয় কেন-ব্যাখ্যা কর ?

উত্তর : জল প্রপাতের পানি উপর হতে নিচে নেমে এলে পানির বিভবশক্তি সম্পূর্ণরূপে তাপশক্তিতে পরিণত হয়। এই উৎপন্ন তাপ সম্পূর্ণরূপে পানি দ্বারা শোষিত হয় ফলে পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বলা যায় যে, পানি উপর থেকে যতই নিচে পতিত হবে এর তাপমাত্রা ততই বৃদ্ধি পাবে।  

  14.প্রশ্ন: স্থির আয়তনে হিলিয়ামের মোলার আপেক্ষিক তাপ 12.59JK-1mole-1 বলতে কী বুঝায়?  

উত্তর : স্থির আয়তনে হিলিয়ামের মোলার আপেক্ষিক তাপ 12.59JK-1mole-1 বলতে বুঝায় আয়তন স্থির রেখে এক মোল হিলিয়াম গ্যাসের তাপমাত্রা এক কেলভিন বৃদ্ধি করতে 12.59J তাপের প্রয়োজন হয়। 

   15.প্রশ্নঃ γ - এর গুরুত্ব বর্ণনা কর।  

উত্তর : স্থির চাপে মোলার আপেক্ষিক তাপ ও স্থির অয়িতনে মৌলরি তাপের অনুপাতকে γ দ্বারা সূচিত করা হয়।   অর্থাৎ  γ=cp/cv বিভিন্ন গ্যাসের জন্য γ এর মান বিভিন্ন রকম হয়। যেমন:  একপারমানবিক গ্যাসের ক্ষেত্রে, γ = 1.67 দ্বি-পারমানবিক গ্যাসের ক্ষেত্রে, γ = 1.40 বহুপারমানবিক গ্যাসের ক্ষেত্রে, γ = 1.33 বিভিন্ন কারনে y বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে এর কয়েকটি উল্লেখ করা হল। ১.γ -এর মান থেকে গ্যাসের আনবিক গঠন সম্পর্কে জানা যায়। যেমন γ = 1.40 হলে আমরা বুঝতে পারি গ্যাসটি দ্বি-পারমানবিক। ২. গ্যাসীয় মাধ্যমে শব্দের বেগ γ − এর উপর নির্ভর করে।  যেমন কোন গ্যাসীর মাধ্যমে শব্দের বেগ, ৩. রুদ্ধতাপীয় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে চাপ, আয়তন ও তাপমাত্রার সম্পর্ক γ এর উপর নির্ভর করে। যেমন, PVγ = ধ্রুবক। 

 16.প্রশ্নঃ গ্যাস প্রসারণে সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় কৃত কাজ সমচাপ প্রক্রিয়ায় কৃত কাজ অপেক্ষা বৃহত্তর-ব্যাখ্যা কর ?

 উত্তর : তাপ গতিবিদ্যার প্রথম সূত্রানুসারে আমরা জানি, dQ = dU + dW বা, dQ = CVdT + dW । কিন্তু সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় dT = 0 অতএব, dQ = dW অর্থাৎ সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় সিস্টেমে সরবরাহকৃত তাপের পুরোটাই কাজে রূপান্তরিত হয়। সরবরাহকৃত তাপের কোনো অংশই তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা অন্তস্থ শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যয় হয়না। পক্ষান্তরে সাচাপ প্রক্রিয়ায় dT≠ 0। অর্থাৎ সরবরাহকৃত তাপের একটা অংশ তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা তন্তস্থ শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যয় হয়। যার কারণে কৃত কাজের পরিমাণ সরবরাহকৃত তাপের থেকে কম হয়। অতএব, গ্যাস প্রসারণে সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় কৃত কাজ সমচাপ পক্রিয়ায় কৃত কাজ তাপেক্ষা বৃহত্তর হয়।

  17.প্রশ্ন : গ্যাসের দুটি আপেক্ষিক তাপ থাকে কেন—ব্যাখ্যা কর। 

 উত্তর: কঠিন ও তরল পদার্থের ক্ষেত্রে তাপ প্রয়োগ করলে ঢাপ ও আয়তনের পরিবর্তন অতি নগণ্য হয়। অপরদিকে গ্যাসীয় পদার্থের ক্ষেত্রে তাপ প্রয়োগ করলে চাপ ও অগ্নিতনের পরিবর্তন খুব বেশি হয়। তাই গ্যাসীয় পদার্থের ক্ষেত্রে চাপ ও আয়তনের যে কোন একটিকে স্থির রেখে অপরটির পরিবর্তন বিবেচনায় এনে আপেক্ষিক তাপ নির্ণয় করতে হয়। এই জন্য গ্যাসের ক্ষেত্রে দুটি আপেক্ষিক তাপ থাকে।


18.প্রশ্ন : দেখাও যে, অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় -এনটপি বৃদ্ধি পায়।  

উত্তরঃ ধরি, T1 তাপমাত্রার একটি উষ্ণ বস্তু হতে T2 তাপমাত্রার একটি শীতল বস্তুতে dQ পরিমাণ তাপ সঞ্চলিত হয়। এখানে T1 > T2 । সুতরাং উষ্ণ বস্তুর এনট্রপির পরিবর্তন dS1 = -dQ/T1 এবং শীতল বস্তুর এনট্রপির পরিবর্তন dS1 = +dQ/T2 সুতরাং এনট্রপির মোট পরিবর্তন, dS=dS1 +dS2 =-dQ/T1+dQ/T2 =dQ/T2-dQ/T1 এখানে T1>T2 হওয়ায় dS>0 । সুতরাং বলা যায় যে, অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় -এনট্রপি বৃদ্ধি পায়।   

19.প্রশ্নঃ এনট্রপির পরিবর্তন 20JK-1 বলতে কি বুঝ?  

উত্তর: কোন সিস্টেমের তাপমাত্রা সাপেক্ষে গৃহিত বা বর্জিত তাপের হার দ্বারা এনট্রপি পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ ds=dQ/T । -এনট্রপির পরিবর্তন 20JK-1 বলতে বুঝায় উক্ত সিস্টেমের তাপমাত্রা 1k পরিবর্তনের জন্য 20J তাপের প্রয়োজন হয়।   

20.প্রশ্ন : দেখাও যে, রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেম অন্তঃস্থ শক্তির বিনিময়ে কাজ করে ?  

উত্তর : তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রমতে, dQ = du + dW, রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপের কোন আদান প্রদান না হওয়ায় dQ= 0  হয় এবং dW= -dU। সুতরাং বলা যায় যে, রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেম অতঃস্থ শক্তির বিনিময়ে কাজ করে।   

21.প্রশ্ন : এন্ট্রপি বিশৃঙ্খলা পরিমাপক? ব্যাখ্যা কর ?  

উত্তর: এন্ট্রপি বিশৃঙ্খলা পরিমাপকঃ এনট্রপি থেকে বিশৃঙ্খলার গাণিতিক ধারনা পাওয়া যায়। আমরা জানি প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া সকল স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনাই অপত্যাগামী। আর সকল অপ্রত্যাগামী ঘটনায় এনট্রপি বৃদ্ধি পায়। এনদীপ বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ হল শৃঙ্খল অবস্থা হতে বিশৃঙ্খল অবস্থার দিকে অগ্রসর হওয়া। যে ব্যবস্থায় এনট্রপি বেশি সে ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মও বেশি। উদাহরণ স্বরূপ পদার্থের তিন অবস্থা বিবেচনা করা যাক। কঠিন অবস্থায় পদার্থের অনুগগুলো সবচেয়ে সুশৃঙ্খল তাবস্থায় থাকে। তরল তাবস্থায় এর শৃঙ্খল অবস্থা খাবেনা, বিশৃঙ্খল অবস্থা বাড়তে থাকে। গ্যাসীয় তাবস্থায় এর বিশৃঙ্খলার মাত্রা সর্বাধিক হয়। আমরা দেখতে দাই, কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে এটি তরলে পরিণত হয় এবং এর বিশৃঙ্খলা বাড়তে থাকে। আবার আমরা জানি, তাপ দেয়ার কারণে বস্তুর এনট্রপিও বৃদ্ধি পায়। তরল পদার্থে আরও তাপ দিলে এটি বাষ্পে পরিণত হয় এবং সর্বাধিক বিশৃঙ্খল অবস্থা প্রাপ্ত হয়। আর গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের এনট্রপিও সর্বাধিক হয়। অত এব আমরা বলতে পারি এনট্রপি বৃদ্ধিতে বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায় এবং এনট্রপি হ্রাসে বিশৃঙ্খলা হ্রাস পায়। সুতরাং আমরা এ সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, ‘এন্ট্রপি বিশৃঙ্খলা পরিমাপক”।   

22.প্রশ্ন: প্রত্যাগামী ও অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ার পার্থক্য লিখ।  

উত্তর : প্রত্যাগামী ও অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ :-   

  প্রত্যাগামী ও অপ্রত্যাগামী প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য    --

  * এ প্রক্রিয়া বিপরীতমুখী ভাবে  প্রত্যাবর্তন করে  --- এ প্রক্রিয়া বিপরীতমুখী ভাবে প্রত্যাবর্তন করে না।  

 * এটি ধীর প্রক্রিয়া  --- এটি দ্রুত প্রক্রিয়া 

 * কার্য নির্বাহক বস্তু প্রাথমিক অবস্থায় ফিরে আসে  --- কার্য নির্বাহক বস্তু প্রাথমিক অবস্থায় ফিরে আসে না।  

*  এটি  স্বতঃস্ফুর্ত প্রক্রিয়া নয়।  --- এটি স্বতঃস্ফুর্ত প্রক্রিয়া। 


23.প্রশ্নঃ দেখাও যে, রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে।

  উত্তর: কোন সিস্টেম T তাপমাত্রায় dQ পরিমান তাপ গ্রহন বা বর্জন করার ফলে এনট্রপির পরিবর্তন, ds=dQ/T । বুদ্ধতাপীয় প্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় কার্য নির্বাহক বস্তুর সাথে পরিবেশের তাপের কোন আদান প্রদান না হওয়ায় dQ =0 হয়। ds =0 হয়। অর্থাৎ, রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে।   

24.প্রশ্নঃ এন্ট্রপির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর ?

উত্তর : এন্ট্রপির তাৎপর্য: নিম্নে এন্ট্রপির কতিপয় তাৎপর্য উল্লেখ করা হল :-  ক) এনট্রপি একটি প্রাকৃতিক রাশি। তাপ ও পরম তাপমাত্রার অনুপাত দ্বারা এনট্রপির পরিবর্তন পরিমাপ করা হয়।  খ) এটি বস্তুর একটি তাপীয় ধর্ম যা তাপ সঞ্চালনের দিক নির্দেশ করে।  গ) এটি বস্তুর তাপীয় অবস্থা নির্ধারণে সহায়তা করে।  ঘ) এন্ট্রপি বৃদ্ধি পেলে বস্তু শৃঙ্খল তাবস্থা হতে বিশৃঙ্খল অবস্থার দিকে ধাবিত হয়।  ঙ) এটি তাপমাত্রা, চাপ, আয়তন, অন্তর্নিহিত শক্তি, চুম্বকীয় তাবস্থার ন্যায় কোন বস্তুর অবস্থা প্রকাশ করে।   

25.প্রশ্ন : সমোষ্ণ ও রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য লিখ ?

 উত্তর: সমোষ্ণ ও রূদ্ধতাপীয় ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:-  সমোষ্ণ ও রূদ্ধতাপীয় ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য সমোষ্ণ  রূদ্ধতাপীয়

  ১। সিস্টেমে তাপের আদান প্রদান ঘটে।  ১। সিস্টেমে তাপের আদান প্রদান ঘটে না।  

২। সমোষ্ণ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে ঘটে।  ২। রূদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া দপ্ত ঘটে।  

৩। অন্তঃস্থ শক্তির পরিবর্তন ঘটে না। ৩। অন্তঃস্থ  শক্তির পরিবর্তন ঘটে। 

৪। তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে না।  ৪। তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে। 

 26.প্রশ্নঃ তাপগতিবিদ্যার ১ম সূত্র ও ২য় সূত্রে মধ্যে গুণগত পার্থক্য কি? 

 উত্তর: তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র শক্তির নিত্যতা সূত্রেরই বিশেষ রূপ। এই সূত্রমতে তাপ কাজে বা কাজ তাপে রূপান্তরিত হতে পারে। কিন্তু তাদ কোন দিকে প্রবাহিত হবে তার সমাধান দিতে পারে না। কিন্তু তাপগতিবিদ্যার ২য় সূত্র এর সমাধান দিতে পারে।   

27.প্রশ্ন : এনট্রপি বলতে কী বুঝায়?  

উত্তর : এনট্রপি : কোন সিস্টেমের শক্তি রূপান্তরের অক্ষমতা বা রূপান্তরের জন্য শক্তির অপ্রাপ্ততাকে এনট্রপি বলে। অথবা, রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় বস্তুর যে তাপীয় ধর্ম অপরিবর্তিত থাকে তাকে এনট্রপি বলে। চাপ আয়তন এবং তাপমাত্রার ন্যায় এটি একটি প্রাকৃতিক রাশি। কোন বস্তুর মোট এনট্রপির পরিমান পরিমাপ করা সম্ভব নয়। কিন্তু এনট্রপির পরিবর্তন পরিমাপ করা যায়। কোন বস্তু তাপ গ্রহন করলে এর এনট্রাপ বাড়ে এবং তাপ বর্জন করলে এনট্রপি করে।  যদি কোন সিস্টেম T তাপমাত্রায় dQ তাপ গ্রহন বা বর্জন করে তবে এনট্রপির পরিবর্তন ds= dQ/T  ।  যদি তাপমাত্রা স্থির না থাকে অর্থাৎ বৃহৎ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এনট্রপির পরিবর্তন ds = ƒT2T1 dQ/T   ।  

 28.প্রশ্ন : কোন ইঞ্জিনের দক্ষতা 60% বলতে কী বুঝায়?  

উত্তর : কোন ইঞ্জিনের দক্ষতা 60% বলতে বুঝায় ইঞ্জিনটি গৃহীত তাপের শতকরা 60 ভাগ কাজে রূপান্তর করতে পারে।  প্রশ্নঃ তাপগতিবিদ্যার ২য় সূত্রের মূল বিষয়গুলো লিখ।  উত্তর: তাপগতিবিদ্যার ২য় সূত্রের মূল বিষয়গুলো হলো-  ১. কোন ব্যবস্থায় এনপি কখনো হ্রাস পায় না।  ২. তাপশক্তিকে সম্পূর্ণরূপে কাজে রূপান্তর করা সম্ভব নয়।  ৩. বাহ্যিক কাজ ব্যতিত নিম্ন তাপমাত্রার স্থান হতে উচ্চ তাপমাত্রার স্থানে তাপ স্থানান্তর করা সম্ভব নয়।   প্রশ্ন : জগতের তাপীয় মৃত্যু ব্যাখ্যা কর।  উত্তর : জগতের তাপীয় মৃত্যুঃ একটি সিস্টেম যতই সাম্যাবস্থার দিকে এগিয়ে যায় তার কাছ থেকে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা ততই কমে যায় ফলে তার এনট্রপিও তত বেড়ে যায়। সাম্যাবস্থায় এন্ট্রপি হয় সর্বাধিক। প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া সকল স্বতঃস্ফূর্ত পরিবর্তন সর্বদা সাম্যাবস্থার দিকে পরিচালিত হয়। সুতরাং সকল স্বতঃস্ফুর্ত পরিবর্তনৈ এনট্রপি বৃদ্ধি পায়। যেহেতু প্রকৃতিতে সবকিছুই সাম্যাবস্থা পেতে চায়, তাই বলা যায় জগতে এন্ট্রপি ক্রমাগত বাড়ছে। জগতের এন্ট্রপি যখন সর্বোচ্চে পৌঁছাবে তখন সবকিছুর তাপমাত্রা এক হয়ে যাবে। ফলে তাপ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করা যাবেনা। এই অবস্থাকে জগতের তাপীয় মৃত্যু বলা হয়।  

29.প্রশ্ন : দেখাও যে, প্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে।  

উত্তরঃ ধরি, T1 তাপমাত্রার একটি উৎস হতে একটি সিস্টেম Q1 তাপ গ্রহন করে এবং T2 তাপমাত্রার একটি তাপগ্রাহকে Q2 পরিমাণ তাপ বর্জন করে।  সুতরাং উৎসের এনট্রপির পরিবর্তন ds1=-Q1/T1,  এবং তাপগ্রাহকের নট্রপির পরিবর্তন ds1=+Q2/T2 সুতরাং এনট্রপির মোট পরিবর্তন, ds = dS1 + dS2  =-Q1/T1+Q2/T2 =Q2/T2-Q1/T1 আবার আমরা জানি, প্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায়  Q1/T1=Q2/T2 সুতরাং এনট্রপির মোট পরিবর্তন, dS = 0 সুতরাং বলা যায় যে, প্রত্যাগামী প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে।  

30.প্রশ্ন : কোন তাপ ইজ্জিনের দক্ষতা 100% হতে পারেনা কেন?  

উত্তর : আমরা জানি, ইঞ্জিনের দক্ষতা, n= 1 - Q2/Q1। এখানে, n = 100% = 1 বা, Q2/Q1=1-n বা, Q2/Q1=1-1 বা, Q2/Q1=0 বা, Q2=0 ইঞ্জিন কর্তৃক বর্জিত তাপের পরিমান শূণ্য হলে ইঞ্জিনের দক্ষতা 100% হয়। অর্থাৎ ইঞ্জিনের দক্ষতা 100% হতে হলে ইঞ্জিন কর্তৃক গৃহীত তাপের সম্পূর্ণ অংশকেই কাজে রূপান্তর করতে হয়। যা বাস্তবে সম্ভব নয় তাই কোন তাপ ইঞ্জিনের দক্ষতা 100% হতে পারেনা। অথবা,  আমরা জানি, ইঞ্জিনের দক্ষতা, n = 1- T2/T1 এখানে, n = 100% = 1 বা, T2/T1=1-n বা, T2/T1=1-1 বা, T2/T1=0 বা, T1/T2= 1/0 বা, T1/T2= α বা, T1= α ইঞ্জিনের উৎসের তাপমাত্রা অসীম হলে ইঞ্জিনের দক্ষতা 100% হয়। যা বাস্তবে সম্ভব নয় তাই কোন তাপ ইঞ্জিনের দক্ষতা 100% হতে পারেনা।   

 এখানে তাপগতিবিদ্যা বিষয় হতে গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো। যেকোনো পরীক্ষায় শতাধিক কমনের নিশ্চয়তা দেওয়া যাই এখান থেকে। তাপগতিবিদ্যার এই অনুধাবন প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তর আমরা তিনটি পর্বে ভাগ করেছি। আশা করি তোমরা উপকৃত হবে। তোমাদের সকলের জন্য এইচএসসি পরীক্ষার শুভ কামনা।

Post a Comment

Previous Post Next Post